লিখিত প্রস্তুতি :::: বাংলা ২য় পত্র
Topic :::: কাল্পনিক সংলাপ ( ১৫ নম্বর )
সিলেবাসে উল্লেখকৃত এই বিষয়টির উপর ২ টি কাল্পনিক সংলাপ শেয়ার করলাম :
১. শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়ার কাল্পনিক সংলাপ (দৈনিক সমকাল হতে সংগৃহীত)
২. গান্ধী ও জিন্নাহর কাল্পনিক সংলাপ
.
=====================
পড়ার ফাকে সংলাপটি একবার পড়লে ক্লান্তি দূর হবেই , ভালো বিনোদন পাবেন।
আর সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত এই বিষয়টি সম্বন্ধে ধারণাতো হবেই! smile emoticon
=====================
.
---------------------------------
★ শাড়ি বিষয়ক ফরমালিনমুক্ত একটি কাল্পনিক সংলাপ
---------------------------------
.
শেখ হাসিনা : কী সৌভাগ্য আমার! এই সাতসকালে আপনি? শুভ সকাল, শুভ সকাল!
খালেদা জিয়া : প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়েছিলাম। যাচ্ছিলাম এ পথ দিয়েই। ভাবলাম দেখেই যাই আপনাকে। দেশ চালাতে কোনোরকম সমস্যা হচ্ছে না তো আপনার? হলে শুধু জায়গায় দাঁড়িয়ে আওয়াজ দেবেন। সঙ্গে সঙ্গে দেখবেন হাজির। চারদিকে বদলোকের তো আর অভাব নেই। খুব টেনশনে থাকি আপনাকে নিয়ে।
শে. হা. : না না, আপনি শুধু শুধু টেনশন করে শরীর খারাপ করবেন না। এতে আবার প্রেসার বেড়ে যেতে পারে। আমার কোনো সমস্যা নেই। তার ওপর আপনি যেভাবে সব সময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে রাখেন, তাতে কোনো সমস্যা কাছে ঘেঁষারই চান্স পায় না।
খা. জি. : আমাকে লজ্জা দেবেন না তো আপা। আমি আর আপনার জন্য এমন কী করলাম! ইদানীং দ্রব্যমূল্য, বাড়ি ভাড়া, গাড়ি ভাড়ার মতো হু হু করে বাড়ছে বয়সটাও। তার ওপর ছেলেরা যা দুষ্টু হয়েছে না। খুব টেনশনে থাকি। তাই আগের মতো আর আপনার খবর রাখতে পারি না।
শে. হা. : আপা বোধহয় বয়স বোঝাতে গিয়ে দ্রব্যমূল্য, গাড়ি ভাড়া, বাড়ি ভাড়া এসবের প্রসঙ্গ না তুললেই পারতেন। অভিযোগটা কিন্তু আমাদের বিরুদ্ধেই যায়। সে যাক, আপনার একটা কথা কিন্তু আমি কিছুতেই মানতে পারছি না আপা। কী এমন বয়স হয়েছে আপনার? এখনও কী সুন্দর সাজুগুজু করেন। দেখলে মনে হয় ভার্সিটিতে পড়েন। বয়স নিয়ে আপনার অকারণেই ভাবনা।
খা. জি. : হুম, আপনাকে বলেছে।
শে. হা. : থাক আপা, বয়স নিয়ে বেশি কথা না বলাই ভালো। কখন আবার আসল বয়সটা বেরিয়ে যায় বলা যায় না। মেয়েদের আসল বয়স না বলাই ভালো। আপার শাড়িটা কিন্তু সত্যিই খুব চমৎকার। খুব মানিয়েছে।
খা. জি. : হুম, ককটেল প্রিন্ট থেকে কিনেছি। ইদানীং খুব চলছে। পছন্দ হলে বলবেন, আপনার জন্য কয়েকটা পাঠিয়ে দেব।
শে. হা. : না না, আমার কাছে বরং মামলা প্রিন্টের শাড়িই আরামদায়ক মনে হয়।
খা. জি. : আমার আবার মামলা প্রিন্টে কিছুটা অ্যালার্জি আছে। একদম ভাল্লাগে না। অবশ্য ককটেল প্রিন্টের পাশাপাশি ইদানীং হরতাল প্রিন্টের শাড়িগুলোও বেশ ভালো চলছে। কালারটাও দারুণ, বুননটাও বেশ টেকসই। আর পরতেও বেশ আরামদায়ক। আমি তো আজকাল ককটেল আর হরতাল প্রিন্টেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।
শে. হা. : আপনার যেমন ককটেল এবং হরতাল প্রিন্টে বিশেষ প্রীতি আছে, আমার আবার এসবে বেশখানিকটা ভীতি আছে। আমার বাপু মামলা প্রিন্টই ভালো।
খা. জি. : তবে যা-ই বলেন আপা, শাড়ি ছিল কেয়ারটেকার প্রিন্ট। শাড়ির রাজা। আমি তো শপিং মলগুলো তন্ন তন্ন করে খুঁজে যাচ্ছি। কিন্তু শাড়িটা নাকি মার্কেট আউট। এটা একটা কথা হলো।
শে. হা. : আপনি জানেন না আপা, শাড়িটা আসলে খুব একটা সুবিধার নয়। শুরুর দিকে তো আমি নিজেই খুব আগ্রহ করে কিনতাম। পরে বুঝেছি খুব খারাপ, খুব খারাপ!
খা. জি. : না আপা, আপনার বোধহয় কোথাও ভুল হচ্ছে। কেয়ারটেকার প্রিন্টের ওপর কোনো শাড়িই হয় না। প্রথম যখন মার্কেটে আসে তখন আমিও পছন্দ করতাম না। পরে বুঝেছি_ একটা খাঁটি জিনিস! আপনি যা-ই বলেন, শাড়ির রাজা কিন্তু কেয়ারটেকার প্রিন্ট!
শে. হা. : কিছু মনে করবেন না আপা, এই জন্য মাঝে মধ্যে আপনার ওপর আমার খুব রাগ হয়। একটা কথা গায়ের জোরে বললে তো হবে না। লজিক থাকতে হবে, লজিক। আপনি যা-ই বলেন, এর চেয়ে দলীয় প্রিন্ট অনেক ভালো। ম্যালা সুবিধাও আছে।
খা. জি. : কিন্তু আমার তাতে ম্যালা অসুবিধা। আপনি যা-ই বলেন, দরকার হলে দেশের সবক'টা শপিং মল তন্ন তন্ন করে হলেও আমি আবার এই শাড়ি বের করব। হুম!
শে. হা. : আমাকে রাগাবেন না বলে দিচ্ছি। কেয়ারটেকার প্রিন্ট আমার একদম পছন্দ না। ব্যস, এটাই ফাইনাল। আমি কিছুতেই আর এ শাড়ি কোথাও দেখতে চাই না। হুম!
খা. জি. : আপনার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলাই আমার ভুল হয়েছে। আপনি থাকেন, আপনার দলীয় প্রিন্ট নিয়ে। আমি গেলাম কেয়ারটেকার প্রিন্টের খোঁজে। দেখি কে আমাকে আটকায়!
(By: ইমন চৌধুরী)
উত্স: দৈনিক সমকাল হতে সংগৃহীত
.
.
---------------------------------
★ গান্ধী ও জিন্নাহর কাল্পনিক সংলাপ
---------------------------------
.
মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী ও মোহাম্মদ আলি জিন্নাহ দু'জনেই গুজরাটি ভাষা বলা পরিবারে জন্মগ্রহণে করেছেন, মুম্বাই ইউনিভার্সিটি থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেছেন। পরে লন্ডনে আইন পড়তে গেছেন। দু'জনেই ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন। কিন্তু দ্বিজাতিতত্ত্ব দু'জনকে দু'জনের পথ ভিন্ন করে দেয়। এই কাল্পনিক সংলাপে গান্ধী ও জিন্নাহ তাদের উত্তরাধিকার, রেখে যাওয়া দেশ নিয়ে কথা বলেছেন।
জিন্নাহ : আপনার চারপাশের সবকিছু... এই যে সন্ত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার ব্যাপার... এটি আমাকে কখনও আকর্ষণ করেনি। আসলে এটি আমাদের আলোচনার ক্ষেত্রে এক ধরনের বাধা ছিল।
গান্ধী : আমি কিন্তু কখনও বলিনি যে আমি সন্ত ছিলাম।
জিন্নাহ : আপনার অনুসারীরা কিন্তু সেভাবেই আপনাকে হাজির করে।
গান্ধী : আমি অনুসারী চাইনি।
জিন্নাহ : আপনি কি চান আমি তা বিশ্বাস করি?
গান্ধী : আমি চেয়েছিলাম। অনেকের সঙ্গে আমি চলেছি। কেউ কেউ অসাধারণ ছিলেন। এই তো...। আপনার সম্বন্ধে বলেন।
জিন্নাহ : আমার সহকর্মীদের ও আমার একক উদ্দেশ্য ছিল, একক আবেগ ছিল। সেটি পাকিস্তান।
গান্ধী : আমার উদ্দেশ্য ছিল সব ভারতীয়র জন্য স্বরাজ। কিন্তু এর চেয়ে বেশি ছিল হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে ঐক্য সাধন।
জিন্নাহ : আপনি সব ভারতীয়র জন্য কথা বলেননি।
গান্ধী : আমি তা মেনে নিচ্ছি। কিন্তু ভারতবর্ষকে এক রাখার ব্যাপারে আমার উদ্দেশ্য যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে ভারতকে ভাগ করার ব্যাপারে আপনার সফলতাকে কি আপনি জয় হিসেবে দেখেন?
জিন্নাহ : আপনাকে এ নিয়ে বিদ্রূপ করতে হবে না, মি. গান্ধী।
গান্ধী : সম্ভবত আমরা দু'জনেই পরাজিত।
জিন্নাহ : আপনি আপনারটা বলতে পারেন, মি. গান্ধী।
গান্ধী : আমরা দু'জনেই ভুলের খাতায় চলে যাচ্ছি।
জিন্নাহ : আপনার মুখ ভারতের টাকায় রয়েছে।
গান্ধী : কাগজের টাকায় হাসতে থাকা আমার মুখশ্রী দেখতে আমার ঘৃণা হয়, যেখানে আমার অনেক মানুষ এখনও দরিদ্র, অপুষ্টিতে ভুগছে, নিগৃহীত হচ্ছে...। কিন্তু পাকিস্তানের অফিসগুলোর দেয়ালে তো আপনার ছবি টানানো থাকে।
(দু'জনের মধ্যে নীরবতা)
গান্ধী : আমি কি আপনাকে জিজ্ঞেস করতে পারি, কায়েদ-ই আজম?
জিন্নাহ : আপনার এই উপাধি ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। আমি এটি বেছে নেইনি।
গান্ধী : মহাত্মার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। আমি কখনও নিজেকে এমনটা মনে করি না।
জিন্নাহ : আপনি কী জিজ্ঞেস করতে চেয়েছিলেন?
গান্ধী : আমি যেমনটা বলছিলাম, আপনি আপনার চাওয়ামতো পাকিস্তান পেয়েছেন। এক্ষেত্রে আমি হেরেছি। আমি স্বাধীন ও অবিভক্ত ভারত চেয়েছিলাম। কিন্তু আমরা ভারতবর্ষকে ভাঙতে দেখলাম।
জিন্নাহ : আমরা পাকিস্তানের জন্ম দেখেছি।
গান্ধী : এটিকে সুখী দেশ বলে মনে হয় না ...
জিন্নাহ : ভারত সুখী?
গান্ধী : আমি একটি প্রশ্ন করতে চাচ্ছিলাম।
জিন্নাহ : করুন। (ঘড়ির দিকে তাকিয়ে) আমি এর জন্য অপেক্ষা করে আছি।
গান্ধী : তারা আমাকে রাষ্ট্রপিতা বলে। কিন্তু এটি সেই দেশ নয়, যা আমি চেয়েছিলাম।
জিন্নাহ : দয়া করে প্রশ্নটি?
গান্ধী : আমার সহযোগীরা আমাকে শুনতে চাইত না। তারা ঝগড়া, যুদ্ধ নিয়েই ব্যস্ত থাকতে চেয়েছে।
জিন্নাহ : প্রশ্নটি কোথায়, মি. গান্ধী?
গান্ধী : আমি এক ছিলাম। অন্যখানে আপনি পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা। রাষ্ট্রের প্রধান ছিলেন, সাংবিধানিক পরিষদের প্রধান ছিলেন, মুসলিম লীগের প্রধান ছিলেন।
জিন্নাহ : হ্যাঁ।
গান্ধী : এখন আমার প্রশ্ন, আমাকে বলুন, আপনি যা চেয়েছেন তাই পেয়েছেন, প্রতিটি জিনিস, তারপরও কি আপনি সুখী মানুষ হিসেবে মৃত্যুবরণ করতে পেরেছেন?
জিন্নাহ : আমার মৃত্যুর সময় আমি খুব যন্ত্রণার মধ্যে ছিলাম।
গান্ধী : তাহলে আমাদের মধ্যে অন্তত দুটি জিনিস এক রকম আছে। আমরা গুজরাটিতে কথা বলি এবং জীবনের শেষ দিনগুলোতে আমরা যন্ত্রণার মধ্যে ছিলাম।
জিন্নাহ : নাগরিক অবাধ্যতা এখন ভারতের জন্য খুব নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে গেছে। এক ধরনের উপহাস...
গান্ধী : আপনার বলা 'ইসলাম বিপদে' কি এখন অপ্রত্যাশিতভাবে ফিরে আসেনি? পাল্টাপাল্টি অভিযোগ আর নয়, প্লিজ ...। আমাদের জন্য নতুন লক্ষ্য রয়েছে, কায়েদ-ই আজম। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে, আমাদের ভূখণ্ডে নিরীহ মানুষেরা আর মারা যাবে না। তা দাঙ্গা, সন্ত্রাস কিংবা যুদ্ধ_ যে কারণেই হোক না কেন। আমাদের অবশ্যই ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশকে যুদ্ধের বাইরে রাখতে হবে।
জিন্নাহ : কাশ্মীরের ব্যাপারে কী হবে?
গান্ধী : আসুন আমরা শ্রীনগরে দেখা করি। আসুন বিভাজন রেখা স্থানান্তরের চেয়ে মুছে দেওয়ার জন্য বসি। আসুন কাশ্মীরকে পরিবেশ সংরক্ষণের বিশ্ব রাজধানী করে তুলি।
গোপালকৃষ্ণ গান্ধী: মহাত্মা গান্ধীর পৌত্র, পশ্চিম বাংলার সাবেক গভর্নর
(ইন্ডিয়া টুডে থেকে ভাষান্তরিত)
(ইন্টারনেট হতে সংগৃহীত )
Topic :::: কাল্পনিক সংলাপ ( ১৫ নম্বর )
সিলেবাসে উল্লেখকৃত এই বিষয়টির উপর ২ টি কাল্পনিক সংলাপ শেয়ার করলাম :
১. শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়ার কাল্পনিক সংলাপ (দৈনিক সমকাল হতে সংগৃহীত)
২. গান্ধী ও জিন্নাহর কাল্পনিক সংলাপ
.
=====================
পড়ার ফাকে সংলাপটি একবার পড়লে ক্লান্তি দূর হবেই , ভালো বিনোদন পাবেন।
আর সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত এই বিষয়টি সম্বন্ধে ধারণাতো হবেই! smile emoticon
=====================
.
---------------------------------
★ শাড়ি বিষয়ক ফরমালিনমুক্ত একটি কাল্পনিক সংলাপ
---------------------------------
.
শেখ হাসিনা : কী সৌভাগ্য আমার! এই সাতসকালে আপনি? শুভ সকাল, শুভ সকাল!
খালেদা জিয়া : প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়েছিলাম। যাচ্ছিলাম এ পথ দিয়েই। ভাবলাম দেখেই যাই আপনাকে। দেশ চালাতে কোনোরকম সমস্যা হচ্ছে না তো আপনার? হলে শুধু জায়গায় দাঁড়িয়ে আওয়াজ দেবেন। সঙ্গে সঙ্গে দেখবেন হাজির। চারদিকে বদলোকের তো আর অভাব নেই। খুব টেনশনে থাকি আপনাকে নিয়ে।
শে. হা. : না না, আপনি শুধু শুধু টেনশন করে শরীর খারাপ করবেন না। এতে আবার প্রেসার বেড়ে যেতে পারে। আমার কোনো সমস্যা নেই। তার ওপর আপনি যেভাবে সব সময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে রাখেন, তাতে কোনো সমস্যা কাছে ঘেঁষারই চান্স পায় না।
খা. জি. : আমাকে লজ্জা দেবেন না তো আপা। আমি আর আপনার জন্য এমন কী করলাম! ইদানীং দ্রব্যমূল্য, বাড়ি ভাড়া, গাড়ি ভাড়ার মতো হু হু করে বাড়ছে বয়সটাও। তার ওপর ছেলেরা যা দুষ্টু হয়েছে না। খুব টেনশনে থাকি। তাই আগের মতো আর আপনার খবর রাখতে পারি না।
শে. হা. : আপা বোধহয় বয়স বোঝাতে গিয়ে দ্রব্যমূল্য, গাড়ি ভাড়া, বাড়ি ভাড়া এসবের প্রসঙ্গ না তুললেই পারতেন। অভিযোগটা কিন্তু আমাদের বিরুদ্ধেই যায়। সে যাক, আপনার একটা কথা কিন্তু আমি কিছুতেই মানতে পারছি না আপা। কী এমন বয়স হয়েছে আপনার? এখনও কী সুন্দর সাজুগুজু করেন। দেখলে মনে হয় ভার্সিটিতে পড়েন। বয়স নিয়ে আপনার অকারণেই ভাবনা।
খা. জি. : হুম, আপনাকে বলেছে।
শে. হা. : থাক আপা, বয়স নিয়ে বেশি কথা না বলাই ভালো। কখন আবার আসল বয়সটা বেরিয়ে যায় বলা যায় না। মেয়েদের আসল বয়স না বলাই ভালো। আপার শাড়িটা কিন্তু সত্যিই খুব চমৎকার। খুব মানিয়েছে।
খা. জি. : হুম, ককটেল প্রিন্ট থেকে কিনেছি। ইদানীং খুব চলছে। পছন্দ হলে বলবেন, আপনার জন্য কয়েকটা পাঠিয়ে দেব।
শে. হা. : না না, আমার কাছে বরং মামলা প্রিন্টের শাড়িই আরামদায়ক মনে হয়।
খা. জি. : আমার আবার মামলা প্রিন্টে কিছুটা অ্যালার্জি আছে। একদম ভাল্লাগে না। অবশ্য ককটেল প্রিন্টের পাশাপাশি ইদানীং হরতাল প্রিন্টের শাড়িগুলোও বেশ ভালো চলছে। কালারটাও দারুণ, বুননটাও বেশ টেকসই। আর পরতেও বেশ আরামদায়ক। আমি তো আজকাল ককটেল আর হরতাল প্রিন্টেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।
শে. হা. : আপনার যেমন ককটেল এবং হরতাল প্রিন্টে বিশেষ প্রীতি আছে, আমার আবার এসবে বেশখানিকটা ভীতি আছে। আমার বাপু মামলা প্রিন্টই ভালো।
খা. জি. : তবে যা-ই বলেন আপা, শাড়ি ছিল কেয়ারটেকার প্রিন্ট। শাড়ির রাজা। আমি তো শপিং মলগুলো তন্ন তন্ন করে খুঁজে যাচ্ছি। কিন্তু শাড়িটা নাকি মার্কেট আউট। এটা একটা কথা হলো।
শে. হা. : আপনি জানেন না আপা, শাড়িটা আসলে খুব একটা সুবিধার নয়। শুরুর দিকে তো আমি নিজেই খুব আগ্রহ করে কিনতাম। পরে বুঝেছি খুব খারাপ, খুব খারাপ!
খা. জি. : না আপা, আপনার বোধহয় কোথাও ভুল হচ্ছে। কেয়ারটেকার প্রিন্টের ওপর কোনো শাড়িই হয় না। প্রথম যখন মার্কেটে আসে তখন আমিও পছন্দ করতাম না। পরে বুঝেছি_ একটা খাঁটি জিনিস! আপনি যা-ই বলেন, শাড়ির রাজা কিন্তু কেয়ারটেকার প্রিন্ট!
শে. হা. : কিছু মনে করবেন না আপা, এই জন্য মাঝে মধ্যে আপনার ওপর আমার খুব রাগ হয়। একটা কথা গায়ের জোরে বললে তো হবে না। লজিক থাকতে হবে, লজিক। আপনি যা-ই বলেন, এর চেয়ে দলীয় প্রিন্ট অনেক ভালো। ম্যালা সুবিধাও আছে।
খা. জি. : কিন্তু আমার তাতে ম্যালা অসুবিধা। আপনি যা-ই বলেন, দরকার হলে দেশের সবক'টা শপিং মল তন্ন তন্ন করে হলেও আমি আবার এই শাড়ি বের করব। হুম!
শে. হা. : আমাকে রাগাবেন না বলে দিচ্ছি। কেয়ারটেকার প্রিন্ট আমার একদম পছন্দ না। ব্যস, এটাই ফাইনাল। আমি কিছুতেই আর এ শাড়ি কোথাও দেখতে চাই না। হুম!
খা. জি. : আপনার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলাই আমার ভুল হয়েছে। আপনি থাকেন, আপনার দলীয় প্রিন্ট নিয়ে। আমি গেলাম কেয়ারটেকার প্রিন্টের খোঁজে। দেখি কে আমাকে আটকায়!
(By: ইমন চৌধুরী)
উত্স: দৈনিক সমকাল হতে সংগৃহীত
.
.
---------------------------------
★ গান্ধী ও জিন্নাহর কাল্পনিক সংলাপ
---------------------------------
.
মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী ও মোহাম্মদ আলি জিন্নাহ দু'জনেই গুজরাটি ভাষা বলা পরিবারে জন্মগ্রহণে করেছেন, মুম্বাই ইউনিভার্সিটি থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেছেন। পরে লন্ডনে আইন পড়তে গেছেন। দু'জনেই ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন। কিন্তু দ্বিজাতিতত্ত্ব দু'জনকে দু'জনের পথ ভিন্ন করে দেয়। এই কাল্পনিক সংলাপে গান্ধী ও জিন্নাহ তাদের উত্তরাধিকার, রেখে যাওয়া দেশ নিয়ে কথা বলেছেন।
জিন্নাহ : আপনার চারপাশের সবকিছু... এই যে সন্ত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার ব্যাপার... এটি আমাকে কখনও আকর্ষণ করেনি। আসলে এটি আমাদের আলোচনার ক্ষেত্রে এক ধরনের বাধা ছিল।
গান্ধী : আমি কিন্তু কখনও বলিনি যে আমি সন্ত ছিলাম।
জিন্নাহ : আপনার অনুসারীরা কিন্তু সেভাবেই আপনাকে হাজির করে।
গান্ধী : আমি অনুসারী চাইনি।
জিন্নাহ : আপনি কি চান আমি তা বিশ্বাস করি?
গান্ধী : আমি চেয়েছিলাম। অনেকের সঙ্গে আমি চলেছি। কেউ কেউ অসাধারণ ছিলেন। এই তো...। আপনার সম্বন্ধে বলেন।
জিন্নাহ : আমার সহকর্মীদের ও আমার একক উদ্দেশ্য ছিল, একক আবেগ ছিল। সেটি পাকিস্তান।
গান্ধী : আমার উদ্দেশ্য ছিল সব ভারতীয়র জন্য স্বরাজ। কিন্তু এর চেয়ে বেশি ছিল হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে ঐক্য সাধন।
জিন্নাহ : আপনি সব ভারতীয়র জন্য কথা বলেননি।
গান্ধী : আমি তা মেনে নিচ্ছি। কিন্তু ভারতবর্ষকে এক রাখার ব্যাপারে আমার উদ্দেশ্য যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে ভারতকে ভাগ করার ব্যাপারে আপনার সফলতাকে কি আপনি জয় হিসেবে দেখেন?
জিন্নাহ : আপনাকে এ নিয়ে বিদ্রূপ করতে হবে না, মি. গান্ধী।
গান্ধী : সম্ভবত আমরা দু'জনেই পরাজিত।
জিন্নাহ : আপনি আপনারটা বলতে পারেন, মি. গান্ধী।
গান্ধী : আমরা দু'জনেই ভুলের খাতায় চলে যাচ্ছি।
জিন্নাহ : আপনার মুখ ভারতের টাকায় রয়েছে।
গান্ধী : কাগজের টাকায় হাসতে থাকা আমার মুখশ্রী দেখতে আমার ঘৃণা হয়, যেখানে আমার অনেক মানুষ এখনও দরিদ্র, অপুষ্টিতে ভুগছে, নিগৃহীত হচ্ছে...। কিন্তু পাকিস্তানের অফিসগুলোর দেয়ালে তো আপনার ছবি টানানো থাকে।
(দু'জনের মধ্যে নীরবতা)
গান্ধী : আমি কি আপনাকে জিজ্ঞেস করতে পারি, কায়েদ-ই আজম?
জিন্নাহ : আপনার এই উপাধি ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। আমি এটি বেছে নেইনি।
গান্ধী : মহাত্মার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। আমি কখনও নিজেকে এমনটা মনে করি না।
জিন্নাহ : আপনি কী জিজ্ঞেস করতে চেয়েছিলেন?
গান্ধী : আমি যেমনটা বলছিলাম, আপনি আপনার চাওয়ামতো পাকিস্তান পেয়েছেন। এক্ষেত্রে আমি হেরেছি। আমি স্বাধীন ও অবিভক্ত ভারত চেয়েছিলাম। কিন্তু আমরা ভারতবর্ষকে ভাঙতে দেখলাম।
জিন্নাহ : আমরা পাকিস্তানের জন্ম দেখেছি।
গান্ধী : এটিকে সুখী দেশ বলে মনে হয় না ...
জিন্নাহ : ভারত সুখী?
গান্ধী : আমি একটি প্রশ্ন করতে চাচ্ছিলাম।
জিন্নাহ : করুন। (ঘড়ির দিকে তাকিয়ে) আমি এর জন্য অপেক্ষা করে আছি।
গান্ধী : তারা আমাকে রাষ্ট্রপিতা বলে। কিন্তু এটি সেই দেশ নয়, যা আমি চেয়েছিলাম।
জিন্নাহ : দয়া করে প্রশ্নটি?
গান্ধী : আমার সহযোগীরা আমাকে শুনতে চাইত না। তারা ঝগড়া, যুদ্ধ নিয়েই ব্যস্ত থাকতে চেয়েছে।
জিন্নাহ : প্রশ্নটি কোথায়, মি. গান্ধী?
গান্ধী : আমি এক ছিলাম। অন্যখানে আপনি পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা। রাষ্ট্রের প্রধান ছিলেন, সাংবিধানিক পরিষদের প্রধান ছিলেন, মুসলিম লীগের প্রধান ছিলেন।
জিন্নাহ : হ্যাঁ।
গান্ধী : এখন আমার প্রশ্ন, আমাকে বলুন, আপনি যা চেয়েছেন তাই পেয়েছেন, প্রতিটি জিনিস, তারপরও কি আপনি সুখী মানুষ হিসেবে মৃত্যুবরণ করতে পেরেছেন?
জিন্নাহ : আমার মৃত্যুর সময় আমি খুব যন্ত্রণার মধ্যে ছিলাম।
গান্ধী : তাহলে আমাদের মধ্যে অন্তত দুটি জিনিস এক রকম আছে। আমরা গুজরাটিতে কথা বলি এবং জীবনের শেষ দিনগুলোতে আমরা যন্ত্রণার মধ্যে ছিলাম।
জিন্নাহ : নাগরিক অবাধ্যতা এখন ভারতের জন্য খুব নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে গেছে। এক ধরনের উপহাস...
গান্ধী : আপনার বলা 'ইসলাম বিপদে' কি এখন অপ্রত্যাশিতভাবে ফিরে আসেনি? পাল্টাপাল্টি অভিযোগ আর নয়, প্লিজ ...। আমাদের জন্য নতুন লক্ষ্য রয়েছে, কায়েদ-ই আজম। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে, আমাদের ভূখণ্ডে নিরীহ মানুষেরা আর মারা যাবে না। তা দাঙ্গা, সন্ত্রাস কিংবা যুদ্ধ_ যে কারণেই হোক না কেন। আমাদের অবশ্যই ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশকে যুদ্ধের বাইরে রাখতে হবে।
জিন্নাহ : কাশ্মীরের ব্যাপারে কী হবে?
গান্ধী : আসুন আমরা শ্রীনগরে দেখা করি। আসুন বিভাজন রেখা স্থানান্তরের চেয়ে মুছে দেওয়ার জন্য বসি। আসুন কাশ্মীরকে পরিবেশ সংরক্ষণের বিশ্ব রাজধানী করে তুলি।
গোপালকৃষ্ণ গান্ধী: মহাত্মা গান্ধীর পৌত্র, পশ্চিম বাংলার সাবেক গভর্নর
(ইন্ডিয়া টুডে থেকে ভাষান্তরিত)
(ইন্টারনেট হতে সংগৃহীত )
No comments:
Post a Comment