Thursday 28 January 2016

৩৫তম বিসিএস লিখিত এর প্রবাদ -প্রবচন By Julkar Nain

৩৫তম বিসিএস লিখিত এর প্রবাদ -প্রবচন ছিল স্বরনকালের কঠিন প্রবাদ- প্রবচন। ২-৩ টা কমন পড়া চরম সৌভাগ্যের বিষয়।
আসুন দেখে নেই প্রবাদ- প্রবচন গুলা-
হরি ঘোষের গোয়াল
হরি ঘোষ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মুঙ্গের দুর্গের দেওয়ান ছিলেন। তিনি দক্ষ ছিলেন বাংলা, ফার্সি ও ইংরেজিতে। অবসরের পর প্রচুর অর্থ জনহিতকর কাজে ব্যয় করতেন। উত্তর কলকাতায় তার বাড়িতে বহু ছাত্র থাকা খাওয়ার সুযোগ পেত। এছাড়া তার বিশাল বৈঠক খানায় শত শত নিষ্কর্মা লোকও তার উদারতার সুযোগে সেখানে আড্ডা দিত ও খাওয়া দাওয়া করতো। গরুরা যেমন গোয়ালের ভেতর শুয়ে বসে জাবড় কাটে আর 'হাম্বা' ডাক ছাড়ে, এদের অবস্থা হরি ঘোষের বাড়িতে ছিল এরকমই। কোনো বাড়ি বা স্থানে অনেক লোকের হৈ চৈ বা কোলাহল থাকলে তাকে হরি ঘোষের গোয়াল বলা হয়।
//ঘুঁটে পোড়ে গোবর হাসে//
সুপ্রাচীনকাল থেকেই জ্বালানি হিসেবে এদেশের গ্রামাঞ্চলে ঘুঁটে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। গোবরের সাথে কাঠ কয়লার গুঁড়া বা ধানের তুষ মিশিয়ে গোল চাকতির মতো বানিয়ে শুকনো হয় ও পরে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ গোবরের অমোঘ পরিণতি হচ্ছে তার থেকে ঘুঁটে হবে এবং সেই ঘুঁটেকে আগুনে পুড়তে হবে। অনেক ব্যক্তি অন্যের দুঃখ কষ্ট দেখে সাময়িক আনন্দ পেলেও তাকেও যে ঐ ধরণের যন্ত্রণা পেতে হতে পারে তা ভাবে না। কারণ সুখ দুঃখ চক্রাকারে আসে। এ ধরণের মানুষের পরিণতি বোঝাতে আলোচ্য প্রবাদের উৎপত্তি।
//চিত্রগুপ্তের খাতা//
সনাতন ধর্ম অনুসারে, চিত্রগুপ্ত হচ্ছেন যমরাজের কেরানি বা হিসাব রক্ষক। তিনি মানুষের জীবনের সব কাজের হিসেব রাখেন। তার কাজে কখনো ভুল হয় না। আর এজন্য মানুষ কোনো কাজ করার আগে ভাবে সে যা করছে তা অদৃশ্য কেউ অর্থাৎ চিত্রগুপ্ত লিখে রাখছেন। অদৃষ্টের লিখন অথবা ভাগ্যের অমোঘ বিধান বোঝাতে চিত্রগুপ্তের খাতা বোঝানো হয়।
//ওঝার ব্যাটা বনগরু//
কোনো জ্ঞানি ব্যক্তির ছেলে যদি মূর্খ হয় তবে তাকে বোঝাতে এ প্রবাদ ব্যবহৃত হয়। ওঝা শবটি এসেছে সংস্কৃত উপাধ্যায় থেকে (উপধ্যায়>উবজঝাঅ>ওঝাঅ>ওঝা)। উপাধ্যায় হচ্ছেন শিক্ষক বা পন্ডিত , এর প্রাকৃত রূপ উবজঝাঅ। তা থেকে এসেছে ওঝা। প্রাচীন ব্রাক্ষণদের মাঝে ওঝা পদবির প্রচলন ছিল, যা দ্বারা জ্ঞানী বোঝাতো। বনগরু এসেছে সংস্কৃত শব্দ গবয় থেকে, যা দ্বারা গলকম্বলহীন গরুর মতো বন্য প্রাণীকে বোঝায়, যারা তেমন কাজে আসে না।
//শিখণ্ডী খাড়া করা//
আড়াল থেকে অন্যায় কাজ করা। যার আড়ালে থেকে এ কাজ করা যায় তাদের বলে শিখণ্ডী। মহাভারতের কাহিনী অনুসারে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে অর্জুন ও ভীষ্মের মাঝে প্রচন্ড যুদ্ধ হচ্ছিল। অর্জুন তার সামনে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন শিখণ্ডীকে। শিখণ্ডী সামনে থাকায় ভীষ্ম কোনো অস্ত্র প্রয়োগ করেন নি। ফলে তাকে হত্যা করেন অর্জুন, যা ছিল যুদ্ধনীতির পরিপন্থী ও অন্যায়।
//থোড় বড়ি খাড়া, খাড়া বড়ি থোর//
একই কথার অর্থহীন পুনরাবৃত্তি।

No comments:

Post a Comment