Tuesday 12 January 2016

৩৬ লিখিত ১ঃ বাংলাদেশ বিষয়াবলি + আন্তর্জার্তিক বিষয়াবলি + বাংলা ২য় পত্র by Samad Azad [Admin, BCS: Our Goal [Largest Job group of Bangladesh]]

সম্ভাব্য প্রশ্ন :: (সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন বা টীকা)
১। ব্লু ইকোনমি বা সমুদ্র অর্থনীতি কী ? 
২। সমুদ্র বিজয়ে বাংলাদেশের প্রাপ্তি কী ? 
৩। সমুদ্র বিজয়ের ফলে দেশের কীরূপ সম্ভাবনার দ্বার উম্নোচিত হয়েছে বলে আপনি মনে করেন? 
৪। বিশ্ব অর্থনীতিতে সমুদ্রের অবদান, সরকারের গৃহীত কর্মসূচী উল্লেখ করুন। 
৫। সমুদ্র সম্পদ রক্ষা ও সদ্ববহারে করণীয় সম্পর্কে আলোকপাত করুন।
.
লিখিত সিলেবাসে উল্লেখকৃত বিষয় : (Related Topics) 
বাংলাদেশ বিষয়াবলি : Natural resources of Bangladesh.
আন্তর্জার্তিক বিষয়াবলি : Bangladesh in International Affairs: Major achievements.
বাংলা ২য় পত্র : রচনা (৪০ নম্বর)


---------------------------------
★ ব্লু ইকোনমি বা সমুদ্র অর্থনীতি কী ?
---------------------------------
বিংশ শতাব্দীজুড়ে পরিবেশগত নানা আন্দোলন ও সম্মেলন আমাদের সামনে নিয়ে এসেছে একের পর এক পরিবেশবান্ধব মডেল। এসব মডেলের মধ্যে গ্রিন ইকোনমি মডেল বা সবুজ অর্থনীতি মডেল ছিল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। একবিংশ শতাব্দীতে এসে প্রয়োজনীয়তা দেখা দিল এই মডেলের অধিকতর সম্প্রসারণের। গ্রিন ইকোনমি মডেলের পরবর্তী ধাপ তথা সম্প্রসারণই ব্লু ইকোনমি নামে পরিচিত, যা অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের পাশাপাশি পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার একটি কার্যকর বিকল্প হিসেবে ইতোমধ্যেই পৃথিবীজুড়ে শক্ত অবস্থান গড়ে তুলেছে।
.
১৯৯৪ সালে অধ্যাপক গুন্টার পাউলি ভবিষ্যতের অর্থনীতির রূপরেখা প্রণয়নের জন্য জাতিসংঘ কর্তৃক আমন্ত্রিত হন। বিস্তারিত আলোচনা, গবেষণা আর নিজের অধীত জ্ঞানের মিশ্রণ ঘটিয়ে পাউলি একটি টেকসই এবং পরিবেশবান্ধব মডেল হিসেবে ব্লু ইকোনমির ধারণা দেন। গত দুই দশকের নানা পরিমার্জন-পরিবর্ধনের মধ্য দিয়ে ব্লু ইকোনমি মডেল আজ একটি প্রতিষ্ঠিত ধারণা। নতুন এই মডেলের আদ্যোপান্ত তুলে ধরতে অধ্যাপক পাউলি ২০১০ সালে প্রকাশ করেন তার সাড়া জাগানো গ্রন্থ ‘"The Open Source from the Source".’ মোট ১৪টি অধ্যায়ে বিভক্ত এই বইটিতে ধাপে ধাপে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়েছে ব্লু ইকোনমির পেছনের তত্ত্ব, তথ্য ও তার প্রয়োগ। নতুন এই মডেল সাদরে বরণ করে নিচ্ছে পৃথিবীর নানা প্রান্তের উদ্যোক্তারা। স্থানীয় প্রযুক্তি, নিজস্ব অভিজ্ঞতা আর ব্লু ইকোনমি মডেলের তত্ত্বীয় জ্ঞানের মিশেল ঘটিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্ভাবন করা হচ্ছে অভিনব নানা ব্যবসা পদ্ধতির। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি এসব ব্যবসা আর্থিকভাবেও লাভজনক বিনিয়োগে পরিণত হয়েছে।
.
---------------------------------
★ সমুদ্র বিজয়- বাংলাদেশের প্রাপ্তি কী ?
---------------------------------
আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ে ২০১২ তে মিয়ানমারের সাথে আর ২০১৪ সালে ভারতের সাথে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিস্পত্তি হ্ওয়ায় মোট ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটারের বেশী টেরিটোরিয়াল সমুদ্র এলাকা এখন বাংলাদেশের। সাথে আছে ২০০ নটিক্যাল মাইল একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল ও চট্টগ্রাম উপকূল থেকে ৩৫৪ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মহীসোপানের তলদেশে সব ধরনের প্রাণীজ-অপ্রাণিজ সম্পদের ওপর সার্বভৌম অধিকার।
.
মিয়ানমারের সাথে সমুদ্রে বিরোধপূর্ণ ১৭ টি ব্লকের ১২টি পেয়েছিল বাংলাদেশ। আর এবার ভারতের দাবিকৃত ১০টি ব্লকের সবগুলোই পেল বাংলাদেশ। সাথে বিরোধপূর্ণ ২৫ হাজার বর্গকিলোমিটার অঞ্চলের ১৯ হাজার পেয়েছে বাংলাদেশ আর বাকি ৬ হাজার দেওয়া হয়েছে ভারতের অধিকারে। দুই বছরের ব্যবধানে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল প্রদত্ত এ রায়দুটোকে প্রত্যেকেই বাংলাদেশের 'সমুদ্র বিজয়' বলে অভিহিত করেছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রী মাহমুদ আলী অবশ্য এবছরের রায়কে ভারত এবং বাংলাদেশ উভয় দেশের বিজয় বলে আখ্যা দিয়েছেন। বাংলাদেশের বিজয় নাকি ভারত-বাংলাদেশ উভয়ের জয় সে বিতর্কে না জড়িয়েই বলা যায় হল্যান্ডের হ্যাগের এ রায়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের যে প্রাপ্তি তা আমাদের জাতীয় জীবনে একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন; নিঃসন্দেহে নবযুগের সূচনা।
.
এ রায়ে বাংলাদেশের স্থলভাগের বাইরে জলসীমায়ও আরেক বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটেছে। ১ লক্ষ ৪৪ হাজার বর্গ কিলোমিটারের বাংলাদেশের জন্য ১ লক্ষ ১৯ হাজার বর্গ কিলোমিটারের সমুদ্রসীমা আরেকটা গোটা বাংলাদেশই বটে। তাই এ রায়কে যুগান্তকারী এবং বিজয় বললে অত্যুক্তি হবার কথা নয়। তবে সমুদ্র বিজয়ই চূড়ান্ত বিষয় নয়; বরং বলা চলে সম্ভাবনার সূচনামাত্র। এখন এই বিজয়কে প্রকৃতার্থে অর্থবহ করে তুলতে চাই বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ।
.
বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় কি পরিমাণ সম্পদ ছড়িয়ে আছে তা আজও বাংলাদেশের পক্ষে জানা সম্ভব হয়নি। তেল-গ্যাসের মতো প্রাকৃতিক সম্পদ অনুসন্ধান করার জন্য অতীতে বারবার আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করার পরও কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে কোনো ধরনের সাড়া পাওয়া যায়নি। এ সাড়া না পাওয়ার একমাত্র কারণ সমুদ্রসীমা নিয়ে বিরোধ। এখন এ রায়ের ফলে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশের পক্ষে কাজ করার ক্ষেত্রে বিনিয়োগে উত্সাহী হবে বলে আশা করা হচ্ছে। রায়ে ভারতের দাবিকৃত সমুদ্ররেখা যদি প্রতিষ্ঠা পেত তবে বাংলাদেশ সমূহ বিপদের মুখে পরতে পারত। তখন গভীর সমুদ্র থেকে জলযান বাংলাদেশ সীমায় প্রবেশ করতে সমস্যা হতো। সম্ভাব্য সে আশঙ্কা থেকেও মুক্তি পাওয়া গেছে এ রায়ের কল্যাণে। এরায়কে মেনে নিয়ে সত্যিকার অর্থে ভারত এবং মিয়ানমার সরকার গণতান্ত্রিক এবং পারস্পরিক সম্পর্কোন্নয়নে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে। দ্বি-পাক্ষিক আলোচনায় বিরোধ নিরসন হচ্ছিল না বলে উদ্যোগী হয়ে এ বিরোধকে আন্তর্জাতিক আদালতে নিয়ে যাওয়া এবং বিরোধ মিমাংসায় বাংলাদেশের প্রাপ্তি তুলানমূলক বিচারে বেশি হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সরকারের সকল সদস্যদের জানানই আন্তরিক অভিনন্দন।
.
---------------------------------
★ ব্লু ইকোনমি ও সমুদ্র বিজয় - কীরূপ সম্ভাবনার দ্বার উম্নোচিত হয়েছে?
কীভাবে খুলে গেছে নীল বিপ্লবের অপার দুয়ার ?
---------------------------------
প্রতিবেশী ভারত ও মিয়ানমার বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তে যে তেল-গ্যাসের সন্ধান পেয়েছে ভূ-তাত্ত্বিকরা বলছেন প্রবল সম্ভাবনা আছে বাংলাদেশ অংশেও পাবার।
.
বিশেষজ্ঞরা বলছেন বঙ্গোপসাগরের সমুদ্র সম্পদ বাংলাদেশকে যেমন দিতে পারে আগামী দিনের জ্বালানী নিরাপত্তা, তেমনি বদলে দিতে পারে অর্থনীতির সামগ্রিক চেহারা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাগরে প্রাণিজ-অপ্রাণিজ সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার, জিডিপিকে দুই অঙ্কের ঘরে নিতে পারে খুব সহজেই।এমনকি দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে সামুদ্রিক খাবার ও পুষ্টি রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করাও সম্ভব।
.
অন্যদিকে দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যাবে সমুদ্র নির্ভর ব্লু ইকোনোমির বদৌলতে।
সোনার বাংলাদেশ গড়ার পথে ব্লু ইকোনোমির নীল বিপ্লব এখন তাই সময়ের দাবি।
.
---------------------------------
★ বিশ্ব অর্থনীতিতে সমুদ্রের অবদান/গুরত্ব কী ?
---------------------------------
পৃথিবীর তিন ভাগ জল। এই বাস্তবতায় পৃথিবীর দেশসমূহ তাদের বর্তমান ও ভবিষ্যত চাহিদা মেটাতে তাকিয়ে আছে সমুদ্রবক্ষে সঞ্চিত সম্পদের দিকে। ২০৫০ সালে পৃথিবীর জনসংখ্যা হবে প্রায় ৯০০ কোটি। এই বিপুল জনগোষ্ঠীর খাবার যোগান দিতে তখন সমুদ্রের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে। সেই লক্ষে জাতিসংঘ ২০১৫ সাল পরবর্তী যে টেকসই উন্নয়ন কর্মসূচী হাতে নিতে যাচ্ছে তার মূলকথাই হচ্চে ব্লু ইকোনোমি। আর ব্লু ইকোনোমির মূল ভিত্তি হচ্ছে টেকসই সমুদ্র নীতিমালা।
.
বিশ্ব অর্থনীতিতে সমুদ্র অর্থনীতি বহুবিধভাবে অবদান রেখে চলেছে। বছরব্যপী ৩ থেকে ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের কর্মকান্ড সংঘটিত হচ্ছে সমুদ্রকে ঘিরে। বিশ্বের ৪ শ ৩০ কোটি মানুষের ১৫ ভাগ প্রোটিনের যোগান দিচ্ছে সামুদ্রকি মাছ, উদ্ভিদ ও জীবজন্তু। পৃথিবীর ৩০ ভাগ গ্যাস ও জ্বালানী তেল সরবরাহ হচ্ছে সমুদ্রতলের বিভিন্ন গ্যাস ও তেলক্ষেত্র থেকে।
.
সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের জ্ঞান বৃদ্ধির মাধ্যমে সমুদ্র নির্ভর ঔষুধশিল্পও গড়ে তোলা সম্ভব বলে মত দিয়েছেন জাতি সংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (FAO) অন্যতম পরিচালক ইন্দ্রয়োনো সয়েসিলো। তিনি আরো বলেছেন, ব্লু ইকোনোমি একাধারে দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা বিধান করতে পারে এবং জিডিপি বৃদ্ধি করে জাতীয় অর্থনীতিকে সমৃদ্ধশালী করতে পারে।
.
সমগ্র বিশ্বে ক্রমশঃ ব্লু ইকোনোমি জনপ্রিয় হচ্ছে। বিগত বছরগুলোতে যতগুলো আন্তর্জাতিক সম্মেলন হয়েছে তার সবগুলোতেই ব্লু ইকোনোমি ছিল আলোচনার কেন্দ্রে। ২০১২ তে রিও+২০, সমুদ্র বিষয়ক এশীয় সম্মেলন, ২০১৩ সালে বালিতে অনুষ্ঠিত খাদ্য নিরাপত্তা এবং ব্লু গ্রোথ ইত্যাদি সম্মেলনের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। অর্থনৈতিক সহায়তা এবং উন্নয়ন সংস্থা (OECD), জাতি সংঘের পরিবেশ কর্মসূচি (UNEP), বিশ্ব ব্যঙ্ক, ফাউ (FAO), ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন (EU) সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার উন্নয়ণ কৌশলের মূলেও থাকছে ব্লু ইকোনোমি।
.
আন্তর্জাতি সংস্থার পাশাপাশি বিভিন্ন ছোট বড় দেশ ব্লু ইকোনোমি নির্ভর উন্নয়ন কৌশল প্রণয়ন করছে। ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় অর্থনীতির সিংহভাগ সমুদ্র নির্ভর। সাম্প্রতিকসময়ে দেশটি এমনকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে যে তার পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন করা গেলে সমুদ্র থেকে আহরিত সম্পদের মূল্যমান জাতীয় বাজেটের দশগুণ হবে। অপরদিকে অস্ট্রেলিয়া সমুদ্রসম্পদ থেকে বর্তমানে প্রায় ৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করে থাকে। আর ২০২৫ সাল নাগাদ এই আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০ বিলিয়ন ডলারে। দ্যা জাকার্তা পোষ্ট এ প্রকাশিত এক প্রবন্ধে বলা হয়েছে দ্যা লমবক ব্লু ইকোনোমি বাস্তবায়ন কর্মসূচী ৭৭ হাজার ৭০০ নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করার পাশাপাশি প্রতিবছর ১১৪.৮৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করবে।
.
---------------------------------
★ সরকারের গৃহীত পদক্ষেপসমূহ কী ?
---------------------------------
১। সমগ্র বিশ্ব যখন সমুদ্র ও সামুদ্রিক সম্পদ নির্ভর ব্লু ইকোনোমির দিকে ঝুঁকছে ঠিক সেসময়ে বাংলাদেশের সমুদ্র জয় অপার সম্ভাবনার জন্ম দিয়েছে, সুযোগ করে দিয়েছে ব্লু ইকোনোমীর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হতে। দীর্ঘদিন উপেক্ষিত থাকার পর সরকার এখন আগ্রহী হয়ে উঠেছে এই সমুদ্র অর্থনীতি বা ব্লু ইকোনমিকে কাজে লাগানোতে। যদিও প্রতিবেশী ভারত, শ্রীলংকা মিয়ানমার ব্লু ইকোনমি নিয়ে কাজ করছে বহু আগে থেকেই।
২। আশার কথা, ইতিমধ্যেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বেশকিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে। এ বছরের সেপ্টেম্বরে ঢাকাতে ব্লু ইকোনোমি নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
৩। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসংক্রান্ত গবেষণা ও নিয়মিত অনুষদ খোলা হয়েছে।
৪। চট্ট্রগ্রামে সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট স্থাপিত হয়েছে। এসবই ইতিবাচক ও বাস্তবসম্মত উদ্যোগ।
সমুদ্রসম্পদ আহরণ ও তার সুফল পেতে এসব উদ্যোগের সুদূরপ্রসারী প্রভাব থাকবে তা সহজেই অনুমেয়।
.
---------------------------------
★ করণীয় কী ?
---------------------------------
সমুদ্রের যতটা জানা তার চেয়ে বেশী অজানা বাংলাদেশের কাছে। হয়নি কোন জরিপ তাই নেই কোন তথ্য। এরপরও সমুদ্রবিজ্ঞানীরা আভাস দিলেন কি সম্পদ আছে এই ব্লু-ইকোনমির আওতায়। তবে সবার আগে প্রয়োজন জরিপ, যা দিবে তথ্য। এরপর নিজেদের স্বক্ষমতা বৃদ্ধি।
.
১। ইন্দোনেশিয়া, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলোর গৃহিত পদক্ষেপগুলো পর্যালোচনা করে একটি সমুদ্র নীতিমালা প্রণয়ণের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। একাজে বিদেশিদের সাহায্য ও পরামর্শ নেবার সাথে সাথে দেশের বাইরে যেসব বাংলাদেশী এইখাতে গবেষণায় ও কাজে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নিতে হবে।
২। সমুদ্র নির্ভর শিল্পের উন্নয়ন ও প্রসারে কার্যকরী সকল ধরনের পদক্ষেপ ও পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ করতে হবে।
৩। মেরিন সায়েন্সের বিকাশে ও স্থানীয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ বিষয়ে আগ্রহী করে তোলার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা প্রণয়ণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
৪। বিদেশি বিনিয়োগকারিদের আহ্বান জানানোর পাশাপাশি দেশীয় শিল্পোদ্যগতাদের ব্লু ইকোনোমি ঘিরে শিল্প প্রতিষ্ঠায় আকৃষ্ট ও আগ্রহী করতে হবে।
৫। চীন ও জাপান এরইমধ্যে ব্লু ইকোনমিতে বাংলাদেশকে সহায়তার আগ্রহ দেখিয়েছে। এখন প্রয়োজন দক্ষ জনশক্তি তৈরী করে নিজেদের সক্ষমতা বাড়িয়ে এই সম্পদকে নিজেদের কাজে লাগানো।
সমুদ্র বিজয়ই এখন আর চূড়ান্ত বিষয় নয়; বরং বলা চলে সম্ভাবনার সূচনামাত্র। তাই এখন এই বিজয়কে প্রকৃতার্থে অর্থবহ করে তুলতে চাই বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ।






No comments:

Post a Comment